শরিফুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ :
শুরু হয়েছে ভাষার মাস। ভাষার মাসেও ঘিওর সরকারী কলেজের সামনে অবস্থিত ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনার অযত্ন—অবহেলায় পড়ে আছে। সারা বছরই ধুলো বালির আস্তরণ পড়ে থাকে। কেবল মাত্র শহীদ দিবস এলেই ধুয়েমুছে পরিষ্কার করা হয়। শহীদ মিনারের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ ও সারা বছর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দাবি জানিয়েছেন সাংস্কৃতিক কর্মীসহ উপজেলার বিশিষ্টজনেরা।
মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারী) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘিওর সরকারী কলেজের মূলফটোকে ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি ধুলো,বালি গাছের ঝরা পাতা এবং আগাছায় ভরে আছে। এছাড়াও উপজেলার বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার অপরিষ্কার—অপরিছন্ন দেখা গেছে।
ঘিওর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন সজল বলেন,‘ভাষা শহীদদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষা বাংলা পেয়েছি। শহীদ মিনার শুধু একদিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নয়। শহীদ মিনার এভাবে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হলে এ প্রজন্মের কাছে শহীদ মিনারের গুরুত্ব কমে যাবে।’
উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা টাইগার লোকমান বলেন,শহীদ মিনার আমাদের গর্ব। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের গভীরতম আবেগ,অনুভূতি। অথচ সেই স্মৃতির মিনারজুড়ে আজ কেবলই অযত্ন—অবহেলার ছাপ। বিষয়টি দুঃখজনক। শহীদ মিনার দ্রুত পরিষ্কারের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে ঘিওর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জীবন কুমার সাহা মুঠোফোনে জানান, এখনো শহীদ দিবসের প্রায় ১৫ দিন বাকি আছে। দু—একদিনের মধ্যেই পরিষ্কার করা হবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর অতিবাহিত হবার পড়েও উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। এতে করে ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৮৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,২২ টি কিন্ডারকার্টেন, ২২ টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২ টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৯ টি মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৭ টি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। বাকি ১০৩ টি বিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। তবে শহীদ মিনার না থাকা সেসব বিদ্যালয়ে দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সারা বছর শহীদ মিনার পরিষ্কার—পরিচ্ছন্ন রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।